
ট্রেনের ছাদে ভ্রমণের সময় গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে পড়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চার শিক্ষার্থীসহ সাত জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে হাটহাজারী উপজেলার ফতেয়াবাদ রেল স্টেশন এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। আহতরা চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, এ দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি হবে। অনেকেই আশপাশের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত আহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, ‘শাটল ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে আহত সাত জনকে হাসপাতালের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে চার জন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।’
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর বটতলী রেল স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে ছেড়ে যায় শাটল ট্রেনটি। ফতেয়াবাদ স্টেশন এলাকায় ট্রেনটি পৌঁছার পর রেললাইনের দিকে হেলে পড়া একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ছাদে বসা অনেকেই আহত হন। এর মধ্যে কয়েকজন নিচে পড়ে যান। অন্ধকারে গাছটি দেখতে পাননি তারা।
শাটল ট্রেনে নিয়মিত চলাচলকারী বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী রাজু আহমদ বলেন, ‘চট্টগ্রাম শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়টিতে রাতে চলাচলের জন্য একটি মাত্র ট্রেন রয়েছে। ফলে এতে উপচেপড়া ভিড় থাকে। এ জন্য ঝুঁকি সত্ত্বেও অনেকেই ট্রেনের ছাদে উঠে যেতে বাধ্য হন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ট্রেনের বগি ও শিডিউল বাড়ালে এ দুর্ঘটনা ঘটত না।’
এদিকে শাটল ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ করা অবস্থায় শিক্ষার্থীরা আহত হওয়ার খবরে উত্তাল হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। রাত সাড়ে ৮টার ট্রেনটি সাড়ে ১০টা নাগাদ ক্যাম্পাসে পৌঁছে। এরপর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় জিরো পয়েন্টে অবস্থিত পুলিশ বক্সে ভাঙচুর চালানো হয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেন। এ সময় উপাচার্যের বাসভবনেও ভাঙচুর চালান তারা।
আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে গিয়ে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, ‘আমরা দেখছি, আহত শিক্ষার্থীরা যেন দ্রুত চিকিৎসা পায় এবং সুস্থ হয়ে ওঠে।’