
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাটল ট্রেনের ছাদে দুর্ঘটনায় ১৫ জন শিক্ষার্থী আহতের ঘটনায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। হেলে পড়া গাছের সঙ্গে ধাক্কায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৯টার দিকে ক্যান্টনমেন্টের চৌধুরীহাট এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাতভর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক বাস ভাঙচুর করা হয়।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, পর্যাপ্ত ট্রেন না থাকায় বাধ্য হয়েই ছাদে যাতায়াত করতে হয়। তাঁদের দাবি—অনতিবিলম্বে যেন ট্রেন ও বগির সংখ্যা বাড়ানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে দুর্ঘটনার সংবাদ পাওয়ার পরপরই আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। ‘এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন’—এমন গুজব ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের দিকে যায় এবং ভাঙচুর শুরু করে। এমনকি আসবাবপত্র বাইরে বের করে বাসভবনের উঠানে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এরপর পরিবহন দপ্তরে মিছিল নিয়ে যায় শিক্ষার্থীরা। সেখানে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যাতায়াতের জন্য রাখা অর্ধশতাধিক বাস ভাঙচুর করা হয়। পরে শিক্ষার্থীরা শিক্ষক ক্লাবের কয়েকটি কক্ষ ভাঙচুর করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দপ্তরের প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৭০টি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে। অধিকাংশেরই কাচ, ফ্লাডলাইট ও বডিতে আঘাত করা হয়েছে।’
চবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কোনো একটা ঘটনা ঘটলে শিক্ষার্থীরা প্রতিক্রিয়া দেখায়। কিন্তু প্রশাসনকে এসব মোকাবিলা করার জন্য সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকতে হয়। প্রশাসনের অসতর্কতা ও যথাযথ প্রস্তুতির অভাবে এত ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।’
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নুরুল আজিম সিকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উপাচার্যের বাসভবন, শিক্ষক ক্লাব, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসসহ বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুরের ঘটনায় কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনো নিরূপণ করা যায়নি। এই ঘটনা তদন্তে আমরা কমিটি গঠন করব। পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’
প্রক্টর বলেন, ‘বর্তমানে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
শিক্ষার্থীরা বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলেও শাটল ট্রেনে হেলে পড়া গাছের সঙ্গে ধাক্কায় একজন আহত হয়েছিলেন। তখন বিষয়টি চৌধুরীহাটের স্টেশন মাস্টারকে জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আহতরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।