
সম্ভাব্য সহিংসতার কথা বিবেচনায় নিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেশের জ্বালানি খাতের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সিসি ক্যামেরা বসানোসহ ১৩ দফা সুপারিশ করেছে জ্বালানি বিভাগ।
জ্বালানি খাতের নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়গুলো দেখভাল করার জন্য একটি মনিটরিং কমিটি রয়েছে। জ্বালানি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আ. খালেক মল্লিক এ কমিটির আহ্বায়ক। সদস্য সচিব হিসেবে আছেন পেট্রোবাংলার ব্যবস্থাপক মো. ইকবাল হোসেন রবিন। সদস্য হিসেবে আছেন জ্বালানি বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন এবং জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের প্রোগ্রামার মাফরুল আলম। এই কমিটি নিয়মিতভাবে জ্বালানি খাতের নিরাপত্তাবিষয়ক প্রতিবেদন তৈরি করে।
কমিটির সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- ‘ জ্বালানি খাতে প্রায় ৫০টি কেপিআইভুক্ত প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর বাইরেও গুরুত্বপূর্ণ অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ফলে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে এসব প্রতিষ্ঠানে যেন কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা না ঘটে, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে কোনো ধরনের অবহেলা বা দায়িত্বহীনতা দেখা দিলে দায়ীদের বিরুদ্ধে যেন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়। জ্বালানি বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে- কোথাও নিরাপত্তাসংক্রান্ত কোনো চ্যালেঞ্জ তৈরি হলে অবশ্যই মন্ত্রণালয়ের কমিটিকে জানাতে হবে।
জ্বালানি খাতের নিরাপত্তা বাড়াতে ১৩ দফা সুপারিশ করেছে কমিটি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- বাংলাদেশ তেল-গ্যাস-খনিজসম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) আওতাধীন ১৩ কোম্পানির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ; বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম
করপোরেশনের (বিপিসি) আওতাধীন কোম্পানিগুলোর অগ্নিনির্বাপণ ও নিরাপত্তা জোরদার করা; কেপিআই এবং কেপিআইবহির্ভূত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তাজনিত ত্রুটি হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ; যেসব স্থাপনায় সিসি ক্যামেরা নেই বা অচল, সেগুলো দ্রুত স্থাপন করা এবং ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষণ করা; স্থাপনাগুলোতে ফায়ার সার্ভিস বা সিভিল ডিফেন্স অথবা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে নিয়মিত মহড়া দেওয়া; সব কোম্পানির বোর্ডসভায় নিরাপত্তার বিষয়ে আলোচনা করা; কেপিআই স্থাপনায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ দেওয়া; জ্বালানি তেল বিক্রির ডিপো বা যেখানে অপারেশনাল কার্যক্রম হয়, সেখানে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং কেপিআই ও অন্যান্য স্থাপনায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসন বা জেলা প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করা।
এ বিষয়ে জ্বালানি বিভাগের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আমাদের সময়কে বলেন, ‘আমাদের দেশে জাতীয় নির্বাচনের আগে নানা ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়। নানা রাজনৈতিক কর্মকা- শুরু হয়। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে কেউ যেন সন্ত্রাস করতে না পারে, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করতে মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিয়েছে।’
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘সবার মানসিকতা এক নয়। অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যে কেউ যেন সাবটেজ করতে না পারে, সেদিকেও আমাদের খেয়াল রাখতে হয়। মন্ত্রণালয় থেকে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখে সতর্ক থাকতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’