Uncategorized

সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন-মধ্যবিত্ত

‘গত বছর যেই বেতনে চাকরি করেছি এই বছরও সেই বেতনেই চাকরি করছি। সংসারের ব্যয় বেড়েছে ঠিকই, আয় কিন্তু বাড়েনি। মাসের শুরুতে বেতন হাতে পাওয়ার প্রথম ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে সব টাকা শেষ হয়ে যায়। বাকি মাস চলতে হয় এদিক সেদিক করে।’ চলমান বাজারদর নিয়ে জিজ্ঞাস করায় এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী ইমতিয়াজ উদ্দিন। দব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই পরিস্থিতিতে শুধু ইমতিয়াজ উদ্দিনই নন, নিম্ন ও মধ্য আয়ের সবার বেলাই ঘটছে এমন ঘটনা।

বাজারে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে চাল, ডাল ও আলুর দাম। অস্থিতিশীল রয়েছে সবজির বাজারও। ফলে সংসারে বাড়তি খরচ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষদের।

দাম বৃদ্ধির কথা স্বীকার করেছেন ব্যবসায়ীরা। উত্তর বাড্ডার ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, মোটা-চিকন সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে চালের দাম। গত সপ্তাহে মোটা চাল কিনেছি ৫২ টাকা কেজিতে। আজকে দাম চাচ্ছে ৫৫ টাকা কেজি। দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আড়ত থেকে বেশি দামে চাল কিনতে হচ্ছে। তাই আমরাও বেশি দামে বিক্রি করছি। দাম বাড়াচ্ছে আড়তদাররা। আড়তদাররা বলছেন, ভারত সরকার চাল আমদানির ওপর শুল্ক আরোপ করায় দাম বেড়েছে।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিআর-২৮ চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ৫২ থেকে ৫৮ টাকার মধ্যে ছিল। চিকন চালের মধ্যে মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৭০ টাকায় এবং নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়।

কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান বলেন, ভারত সরকার চালের ওপর শুল্ক আরোপ করার পর থেকে মিল মালিকদের কাছ থেকে চাহিদা অনুসারে চাল পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে চালের দাম বাড়ছে। চালের দামের পাশাপাশি মসুর ডাল কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা এবং আলু প্রতি কেজি ৫ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় নিত্য প্রয়োজনীয় এসব দব্যসামগ্রীর দাম বাড়ছে বলে অভিযোগ করছেন ব্যবসায়ীরা।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজারগুলোতে গত সপ্তাহে খুচরায় প্রতি কেজি মোটা মসুর ডাল ৯০ থেকে ৯৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। সেই ডালের কেজি এখন ৯৫ থেকে ১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি দানার মসুর ডালের কেজি ৫ টাকা বেড়ে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর সবচেয়ে ছোট দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪৫ টাকায়; যা গত সপ্তাহে কেজি প্রতি বিক্রি হয়েছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা। আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিতে। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৪৫ টাকা কেজিতে।

এছাড়াও সবজির মধ্যে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজিতে, পেঁপে ৩০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৭০ টাকা, ফুলকপি ৬০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, গোল বেগুন ১২০ টাকা, মূলা ৫০, টমেটো ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, করলা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ঝিঙা ৭০, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা কেজি, প্রতি পিস লাউ ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতারা বলছেন, কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানো হয়েছে বলে একজনের অভিযোগ আরেকজনের বিরুদ্ধে। অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি ঠেকাতে বাজারের প্রতি নজরদারি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন তারা।



Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button