
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ ভূঁইয়া
নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়ে বিবৃতিতে সই না করা সংক্রান্ত বক্তব্য ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ ভূঁইয়া কাউকে খুশি করার জন্য দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। আজ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আমাদের অফিস থেকে আমার জানামতে, আমি একদম নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, এই ধরনের কোনো বিবৃতি রেডি হয় নাই। কারণ কেন হবে স্টেটমেন্ট? আমি নিজে যেখানে প্রথম দিনই বলে দিয়েছি, অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে বলছি যে, উনারা (নোবেল বিজয়ী ও বিশ্বনেতা) যে স্টেটমেন্টটা দিয়েছেন, সেই স্টেটমেন্টটা সঠিক হয় নাই। কারণ উনারা তথ্যটা জানতেন না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক দুই বার উনাদের (ড. ইউনূসের) আবেদনটা প্রত্যাখ্যান হয়েছে। তারপর শুনানি হবে ওখানে। সর্বোচ্চ বিচারিক আদালত যখন বলে এটা হবে, তখন প্রশাসনিকভাবে এটা কেউ প্রত্যাহার করতে পারে? আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, যারা বিবৃতি দিয়েছেন, তারা এই ফ্যাক্ট-ঘটনাগুলো পুরো জানেন না। সেই কারণে আমি প্রথম দিনই বলেছি। অ্যাটর্নি জেনারেল বলার পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের আর সই করার দরকার পড়ে? অ্যাটর্নি জেনারেল বলা মানে এই অফিস বলেছে।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘গতকাল এই অফিসে উনার (এমরান) ছুটি ছিল। ডিউটি ছিল না। উনি দেখলাম স্যুট-টাই পরে চলে এসেছেন। এখানে আসেন নাই, যেখানে রেগুলার ব্রিফিং করা হয়, সেখানে গিয়েছেন। যেয়ে উনি কতগুলো কথা বললেন, কী কারণে বললেন, কোন উদ্দেশ্যে বললেন, আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখেন। কাকে খুশি করার জন্য কথাগুলো বললেন, আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখেন।’
তিনি বলেন, ‘নিশ্চিত থাকেন, অন্য কাউকে খুশি করার জন্য তিনি (এমরান) এটা করেছেন, এই বক্তব্য দিয়েছেন।’
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সাংবাদিকরা জানতে চাইলে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি তো ব্যবস্থা নেওয়ার কেউ না। আমি তো অ্যাপয়েন্টিং অথরিটি না।’
গতকাল সোমবার সাংবাদিকদের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া বলেন, ‘অধ্যাপক ড. ইউনূসের পক্ষে ১৬০ জনের বেশি নোবেল বিজয়ী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অনেকেই বিবৃতি দিয়েছেন, ড. ইউনূসকে বিচারিক হয়রানি করা হচ্ছে। সেটার বিপরীতে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে একটি বিবৃতি দেওয়ার কথা রয়েছে। নোটিশ দেওয়া হয়েছে, অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে কর্মরত সবাইকে সেই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে হবে। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করব না।’
বিবৃতিতে স্বাক্ষর না করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলে যে আইন সংস্কার হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল। সে রকমই বিবৃতিতে স্বাক্ষর না করা আমার নিজস্ব চিন্তা।’
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, ‘১৬০ জন নোবেল বিজয়ী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন যে বিবৃতি দিয়েছেন, আমি ওনাদের বিবৃতির সঙ্গে একমত। তাই আমি মনে করি, অধ্যাপক ড. ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তার সম্মানহানি করা হচ্ছে এবং এটা বিচারিক হয়রানি।’
আরও পড়ুন:
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে: আইনমন্ত্রী
ড. ইউনূসের বিপক্ষে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করব না: ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল
ইউনূসের বিরুদ্ধে সই না করে চাকরি হারাচ্ছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল