Uncategorized

একটি বানোয়াট, কাল্পনিক ও মিথ্যা মামলা নিয়ে প্রকা

ঢাকায় অবস্থানরত কলাপাড়ার প্রতিষ্ঠিতদের উদ্যোগে গত কয়েক বছর ধরে এলাকার আর্থ সামজিক উন্নয়নে কাজ করে আসছে ফেসবুক ভিত্তিক প্লাটফর্ম “কলাপাড়া গ্রাজুয়েট ক্লাব”। সকলের সহায়তায় কলাপাড়ার প্রতিটি ইউনিয়নে গত তিন বছরে প্রায় এক কোটি টাকার সহায়তা দিয়েছে এই সংগঠন। করোনায় চাকরি হারানো মানুষ এবং টিউশনী হারানো শতাধিক শিক্ষার্থীর মাঝে সর্বনিম্ন তিন হাজার এবং সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা করে নগদ অর্থ সহায়তা দেই আমরা। এছাড়া উপজেলায় করোনাকালে সর্ব প্রথম ফ্রি অক্সিজেন সিলিন্ডার সর্ববরাহ করে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে আমাদের কলাপাড়া গ্রাজুয়েট ক্লাব। অন্তত ১০টি গৃহহীনের ঘর নির্মাণ করে দেয়া, ২২জন জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে কলাপাড়া থেকে ঢাকায় এনে চিকিৎসা করিয়ে গ্রামে পাঠানোর ঘটনাও সবার মাঝে আলোচিত হয়। করোনাকালে এলাকার বড় ভাইদের উৎসাহে আমরা এমন একটি ব্যবসায়িক প্লাটফর্ম তৈরির উদ্যোগ নেই, যার মাধ্যমে এলাকায় কিছু মানুষের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি লাভ্যাংশ দিয়ে কলাপাড়ায় পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী, অসহায়, হতদরিদ্র মানুষের কল্যাণে কাজ করা সহজ হয়। তারই অংশ হিসেবে কুয়াকাটায় একটি নিস্কণ্টক জমিতে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেই আমরা। প্রায় দুই বছর যাচাই-বাছাইয়ের পর ২০২০সালের জানুয়ারি মাসে কুয়াকাটার বাউন্ডারি করা একটা জমিতে বায়না করে সাইনবোর্ড দেই। শুধু তাই নয়, জমি নিয়ে কোনো বিরোধ আছে কিনা তা জানতে আমরা পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি পর্যন্ত দেই। প্রায় সাড়ে তিন বছর “জমিতে আমাদের ফোন নাম্বরসহ সাইনবোর্ড টাঙ্গানো থাকলেও কেউ কোনোদিন সেই জমি নিয়ে আমাদের কাছে কোনো আপত্যি জানায়নি। সেল পারমিশন পাওয়ার পর গত রমজানে “সানভিউ প্রোপার্টিজ লিমিটেড” এর কাছ থেকে আমরা ২৪.৮০ শতাংশ জমি সাব-কবলা রেজিস্ট্রশন করে নেই। যদিও ওই প্লটে জমির পরিমান ছিল ৩৬.৮০ শতাংশ। আমরা ঢাকা থেকে আমাদের জমি পরিদর্শনে গেলে জনৈক আব্দুর রহমান শরীফ ওরফে মিজান শরীফ (পিতা লতিফ শরীফ, গ্রাম-নিজামপুর, মহিপুর) নামীয় লোক আসে। তিনি দাবি করেন, ওই মৌজায় তাদের ওয়ারিশসূত্রে পাওয়া ০৩ শতাংশ জমি রয়েছে। যেহেতু প্লটে জমির পরিমান ৩৬.৮০ শতাংশ, তাই আমরা আমাদের রেজিস্ট্রিকৃত ২৪.৮০ শতাংশ বুঝে নেয়ার পর তাকে অবশিষ্ট জমি নিয়ে আমাদের দলিলদাতা সানভিউয়ের সাথে বসার পারামর্শ দেই। কিন্তু পরে জানতে পারি আব্দুর রহামন শরীফ তাদের ওয়ারিশ হিসেবে প্রাপ্ত জমি আগেই সানভিউয়ের কাছে রিজিস্ট্রার্ড বায়না দিয়ে ৫লক্ষ টাকা নিয়েছে। কিন্তু বায়না দিলেও দীর্ঘ দিন ধরে জমি সাবকবলা দিতে তালবাহনা করছে। সানভিউয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেই বায়না দলিল আমাদের সরবরাহ করার পর আমরা অবাক হয়ে যাই। শুধু সানভিউ নয়, একই জমি অন্তত পাঁচজনের কাছে বায়না দিয়ে বিভিন্ন অংকে টাকা নিয়ে প্রতারণা করেছে এই চক্রটি। এই প্রতারণার জন্য সানভিউয়ের কাছে পাত্তা না পেয়ে একদিন আমাকে ফোন দিয়ে আব্দুর রহমান শরীফ বলেন, আমাদের ক্রয়কৃত জমির মধ্যেই তার ওয়ারিশের জমি বিদ্যমান। সেই তিন শতাংশ জমির দাম বাবদ ৪৫লক্ষ টাকা না দিলে জমিতে কেউ গেলে লাশ হয়ে ফিরতে হবে বলেও হুমকি দেন তিনি। যার ফোন রেকর্ড সংরক্ষিত আছে। পরবর্তীতে আমাদের অনুপস্থিতিতে তিনি একক সিদ্ধান্তে আমাদের জমি মাপজোপ করতে যান। তখন আমরা সবাই ঢাকায় অবস্থান করছিলাম। এমনকি কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র বিষয়টি নিয়ে আমাকে ফোন করলে আমি তাকে জানাই যে, রহমান শরীফ আমাদের মধ্যে জমি পেয়ে থাকলে আমরা আপনার মধ্যস্ততায় কুয়াকাটায় বসে তার জমি বুঝিয়ে দেবো। (কল রেকর্ড সংরক্ষিত)। এরপর ২৯জুলাই, ২০২৩ তারিখ সকালে কাউকে কিছু না জানিয়ে আমাদের প্রায় ১৬ বছরের প্রাচীণ বাউন্ডারি ভেঙ্গে জমিতে প্রবেশ করে রহমান শরীফ গং এবং কয়েকজন চিহ্নিহ ভুমিদস্যু। টাকা না দিলে মেরে ফেলার হুমকি দেয় তারা। ওই দিনই আমরা মহিপুর থানায় এই সংক্রান্ত একটি জিডি করি। আমাদের কথা হলো- জনাব আব্দুর রহমান ওরফে মিজান শরীফ আমাদের বাউন্ডারি করা জমির ভেতরে জমি পেয়ে থাকলে তিনি মামলা করে আসবেন। কিন্তু দেশের প্রচলিত আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে আমাদের সীমানা প্রাচীর ভাঙ্গলেন কোন অধিকারে? (সীমানা প্রাচীর ভাঙ্গার ভিডিও সংরক্ষিত আছে)। দ্বিতীয়ত: আমরা যাদের কাছ থেকে জমিটি ক্রয় করেছি, ওই মৌজায় সেই সানভিউয়ের দখলে বর্তমানে আরো জমি রয়েছে। আব্দুর রহমান ওরফে মিজান শরীফ গংরা সেই জমিতে না গিয়ে আমাদের দেয়াল ভেঙ্গে জমিতে ঢুকতে চান কেন? এর উত্তর আমাদের জানা। কারন তাদের জমি বায়না রেজিস্ট্রি দিয়ে সানভিউয়ের কাছ থেকে বিপুল পরিমান টাকা নিয়েছেন। সানভিউয়ের সাথে বসতে গেলে হয় সেই টাকা ফেরত দিতে হবে, নয়তো জমি রেজিস্ট্রি করে দিতে হবে। এই ভয়ে তারা আমাদের জমিতে অবৈধ অনুপ্রবেশকেই নিরাপদ মনে করেছে। অথচ তাদের জানা উচিত, আমরা ক্রেতাগণ কলাপাড়ারই সন্তান এবং কেউ-ই রাস্তা থেকে উঠে আসা নই।
এবার আসি মামলা প্রসঙ্গে..
২৯ জুলাই চাঁদা দাবি এবং দেয়াল ভাঙ্গার ঘটনার পর আমাদের পেশাগত ব্যস্ততার কারনে আমরা মামলা করতে পারিনি। পরে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যার, শ্রদ্ধেয় বড় ভাই আব্দুর রব ভাইকে সাথে নিয়ে গত ২৪ আগস্ট, ২০২৩ তারিখে কলাপাড়া উপজেলা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করি। এরর তিন দিন পর একই আদালতে একটি মিথ্যা ও বানোয়াট পাল্টা মামলা করে প্রতিপক্ষ। পাল্টাপাল্টি এই মামলাকে কেন্দ্র করে সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতাকা তোয়াক্কা না করে কিছু নামসর্বস্ব পত্রিকায় আমাকে জড়িয়ে মিথ্যে ও বানোয়াট সংবাদ পরিবেশন করে। অথচ আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি, আমার সাংবাদিকতা ক্যারিয়ারে শুধু কলাপাড়া নয়, দেশের কোনো প্রান্তের কারো কাছ থেকে অনৈতিকভাবে চাঁদা নিয়েছি-এমন প্রমাণ দিতে পারলে আমি আমার সাংবাদিকতা ছেড়ে দেব। পেশাগত জীবনে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে যারাই সহায়তা চেয়েছেন, আমি আমার সবটুকু শক্তি দিয়ে তার পাশে দাঁড়িয়েছে। কলাপাড়া উপজেলায় এমন হাজারো উদাহরণ রয়েছে। ন্যূনতম সাংবাদিকতার নীতি মানলে শিরোনামটি হতে পারতো- “কুয়াকাটায় জমি নিয়ে বিরোধ; পাল্টাপাল্টি মামলা”। যেহেতু মামলা প্রথমে আমরা করেছি, সুতরাং এটাই হতো প্রকৃত সাংবাদিকতা । কিন্ত দু:খজন হলেও সত্যি যে, উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমাকে হেয় করার মানসে সম্পূর্ণ নীতিনৈতিকরা বিবর্জিতভাবে নিউজটি করেছেন তথাকথিত কিছু সাংবাদিক। মামলায় উল্লেখিত বাকি অভিযোগগুলো সম্পর্কে আপনাদের বিবেকের ওপর ছেড়ে দিলাম। সবশেষ বলতে চাই, আমরা জ্ঞাতভাবে কারো প্রতি অন্যায় আচরণ কিংবা জবরদখলের সাথে জড়িত নই। বাকিটুকু দেশের আদালত ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে উঠে আসবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
আপনাদের জ্ঞাতার্থে ওয়াল ভাঙ্গার ভিডিও এবং সানভিউয়ের কাছে রেজিস্ট্রার্ড বায়না দিয়ে টাকা নেয়ার প্রমাণ সংযুক্ত করলাম। কারো প্রয়োজন হলে টাকা দাবির এবং হত্যার হুমকির অডিও আমার কাছ থেকে নিতে পারবেন। এমনকি ওয়াল ভাঙ্গার আগের দিন কুয়াকাটা মেয়রের সাথে আমার কথোপকথন এবং রহমান শরীফ গংদের দাবি নিয়ে আলোচনায় বসার প্রস্তাবের রেকর্ড যে কেউ নিতে পারবেন।

ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতাসহ
মুহিবুল্লাহ মুহিব
গণমাধ্যমকর্মী



Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button